জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল - জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস

জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস সম্পর্কে আপনি অবগত নন বলেই এই আর্টিকেলটিতে ক্লিক করেছেন। পুরো আর্টিকেল জুড়ে আমি আপনাদের জানাবো জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, জাতিসংগঠনের ইতিহাস এবং জাতিপুঞ্জ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় এগুলো সহ জাতিসংঘ বিষয়ে যাবতীয় সকল তথ্য।
জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল
জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং জাতিসংঘ নিয়ে আপনার যত প্রশ্ন রয়েছে সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

ভূমিকা

জাতিসংঘ বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই জাতিসংঘের কাজ হলো জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধবোধ গড়ে তোলা। আন্তর্জাতিক আইনের আদলে যে সব বিধি মালা রয়েছে সেই আইন গুলোর সাহায্য নিয়ে আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করা এবং বিবদমান দেশ গুলোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা জাতিসংঘের কাজ।

জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল

জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার কারন- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর দেশ সমূহের মধ্যে পরবর্তী সংঘাত এড়ানোর জন্য মূলত জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। জাতিসংঘ এর সদস্য দেশগুলোর অভিভাবক হিসাবে কাজ করে। সদস্য দেশগুলোর মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং মানবিক ভাবে সহায়তা করা।
অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন করা। আন্তর্জাতিক রাজমহলে সকল রাষ্ট্রের প্রতি সমান সম্মান, ন্যায় বিচার এবং আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ক সকল ধরনের শান্তি নিশ্চয়তা করার জন্য জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস

জাতিসংঘ গঠনের মূল উদ্দেশ্য বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা। আন্তর্জাতিক বিশৃংখলা সমাধান করার জন্য জাতিপুঞ্জ থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত ঘটনা হওয়ার কারণে বিশ্ব নেতারা হতবাক । মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজবেল্ট সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বের অরাজকতা নিয়ন্ত্রণ, শান্তি স্থাপন করতে একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠন করা প্রয়োজন।

১২ জুন ১৯৪৮ তারিখে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ লন্ডন ঘোষণার মাধ্যমে নেয়া হয়। জার্মানি ব্রিটেন কে আক্রমন করার মাধ্যমে ইউরোপ ভূখণ্ড হারায় নয়টি দেশের প্রবাসী সরকার এই লন্ডন ঘোষণা দেয়।

১৮ আগস্ট ১৯৪৮ তারিখে দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসাবে আটলান্টিক সনদ স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজবেল্ট এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। আটলান্টিক মহাসাগরে। প্রিন্সেস অব ওয়েলসে নামক ব্রিটিশ রণতরীতে বসে। যা আটলান্টিক সনদ নামে পরিচিত।

৪-১১ ফেব্রুয়ারী ১৯৪৫ সালে ক্রিমিয়ার ইয়াল্টা প্রদেশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্র বাহিনীর দেশগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক করার জন্য যে বৈঠক হয় তাই ইয়াল্টা কনফারেন্স নামে পরিচিত। কনফারেন্সের মূল লক্ষ্যই ছিল জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা। ইয়াল্টা কনফারেন্স পটস ড্রাম কনফারেন্স নামে পরিচিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ব্রিটিশ ও সোভিয়েত ইউনিয়ন মিলিত হয়ে যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণ করেন। ইয়াল্টা কনফারেন্স স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা জোসেফ স্টালিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল।

জাতিসংঘ সনদ এর অর্থ হল একটি সংবিধান। যে সংবিধানের উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় এই সনদে রয়েছে ১৯ টি অধ্যায় যাতে রয়েছে ১১১ টি ধারা। সান ফ্র্যান্সিসকো তে মিলিত হয়ে পঞ্চাশটি দেশ এই সনদে স্বাক্ষর করে ২৬ জুন ১৯৪৫ সালে। কিন্তু পোল্যান্ড স্বাক্ষর করে ২৪ শে অক্টোবর ৫১ তম দেশ হিসাবে এ কারণে প্রতিবছর ২৪ শে অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস পালন করা হয়।

জাতিপুঞ্জ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়

জাতিসংঘ এর পূর্বসূরি আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিপুঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন ১৪ দফা ঘোষণা করেন ১৯১৮ সালের ৮ জানুয়ারী। এই ১৪ দফার ভিত্তিতে গঠিত হয় জাতিপুঞ্জ ১৯২০ সালের ১০ জানুয়ারী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা জাতিপুঞ্জের মুল উদ্দেশ্য ছিল। বিবদমান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ বা বল প্রয়োগমূলক ব্যবস্থাও নিতে পারে শান্তি রক্ষার প্রয়োজনে।

পঞ্চাশের দশকে কোরিয়ার এবং উপসাগরীয় যুদ্ধে দুইবার জাতিপুঞ্জের নামে যৌথ সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। জাতিপুঞ্জ সংস্থাটি ২৭ বছর চালু ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত ঘটনা ঠেকাতে না পারার কারণে মূলত ব্যর্থ হয় জাতিপুঞ্জ জাতিপুঞ্জ বিলুপ্ত হয় ১৯৪৬ সালে ২০ এপ্রিল।

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি

জাতিসংঘ মূলত পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার কারণে প্রতিষ্ঠিত করা হয় । শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো যাদের কাছে পারমাণবিক শক্তি রয়েছে যেমন (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, ভারত, চীন) দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে যেমন (ফিলিস্তিন, নেপাল, ভুটান) নির্যাতন নিপীড়ন, বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টি না করতে পারে । প্রত্যেকটি রাষ্ট্রকে সমান মর্যাদা এবং সমান সুবিধা প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া, বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন করা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা প্রদান করা জাতিসংঘের উদ্দেশ্য।

জাতিসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে কত সালে স্বীকৃতি দেয়?

জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো ৩০ তম অধিবেশনে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ এর ২১শে ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এবং 2000 সালের একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে পৃথিবীর ১৮৮ টি দেশ একযোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।জাতিসংঘ ৫ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ

আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা সংরক্ষণের জন্য নিরাপত্তা পরিষদ প্রধান অঙ্গ সংস্থা। জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত সকল দেশ এর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে এবং তা কার্যকর করতে সম্মত রয়েছে। কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিবাদদি নিরাপত্তা পরিষদ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করে।কোন দেশগুলোকে নতুন সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে অথবা কাকে মহাসচিব নিযুক্ত করা যেতে পারে সে বিষয়ে সাধারণ পরিষদের কাছে সুপারিশ করা নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব।

নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রয়েছে পাঁচটি স্থায়ী সদস। সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দেশগুলোর প্রধান মিত্র শক্তি ছিল এবং অস্থায়ী সদস্য হিসেবে সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ২ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়।

জাতিসংঘের সংস্থা সমূহ

জাতিসংঘের বিভিন্ন বিশেষায়িত সংস্থা সমূহঃ
  • ITU (International Telecommunication Union) এই সংস্থাটি জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা সমূহের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেলিকমিউনিকেশন এবং যোগাযোগ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে সংস্থাটি।
  • ILO (International Labor Organization) জাতিসংঘের এই সংস্থাটি সরকার কর্মচারী এবং শ্রমিক এই তিন পক্ষ নিয়েই কাজ করে থাকে তাই এই সংস্থাকে ত্রিপক্ষীয় সংস্থা বলা হয়.
  • UPU (Universal Postal Union) আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ডাক বিষয়ে তদারকি করে থাকে.
  • FAO (Food and Agriculture Organization) বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি
  • UNESCO (United Nation Educational, Scientific and Cultural Organization) মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করে শিক্ষা বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি প্রসারের মাধ্যমে।
  • IMO (International Maritime Organization) এই সংস্থাটি সমুদ্রের নিরাপত্তা সমুদ্রের আইন সমুদ্রের পরিবেশ ঠিক রাখতে কাজ করে
  • WHO (World Health Organization) বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য সুস্থ রাখার বিষয়ে এই সংস্থাটি কাজ করে
  • UNDP (United Nation Development Program) উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিয়ে কাজ করে ইউএনডিপি। উন্নয়নশীল দেশগুলো কিভাবে সম্পদ আরোহন করবে সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে সংস্থাটি।
  • UNFPA (United nation Population Fund) বিশ্বব্যাপী মাতৃ স্বাস্থ্যের বিষয় নিয়ে কাজ করে নিরাপদ প্রজনন বিষয়ে বিশ্বকে সচেতন করা সংস্থাটির প্রধান কাজ।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকা

বিবদমান দেশ গুলোর সেনা সদস্য দের নিরস্ত্রকরণ , নির্বাচন সঠিক ভাবে পালন এ সহায়তা, উন্নয়ন মুলক কাজ এ সক্রিয় ভুমিকা পালন করছে বাংলাদেশ দেশ থেকে যাওয়া শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। ৮১৬৬১ জন বাংলাদেশি কর্মরত আছেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ১১৮ টি দেশে। সর্ব প্রথম ২ টি মিশনে অংসগ্রহন করে ইরাক UNIIMOG এবং নামিবিয়া UNTAG ১৯৮৮ সালে। শান্তি রক্ষী প্রেরন এর দিক থেকে বাংলাদেশ ১ম স্থান লাভ করে ১২৫টি দেশ এর মধ্যে।

জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের মূলনীতি কয়টি ও কি কি

শিশু অধিকার সনদের মূলনীতি ৪ টি।
  • বৈষম্যহীনতা।
  • সর্বোত্তম স্বার্থ।
  • শিশু অধিকার সমুন্নত রাখতে পিতা মাতার কর্তব্য।
  • শিশুদের মতামত এর প্রতি সন্মান প্রদর্শন।

জাতিসংঘের মহাসচিবের নামের তালিকা

  • ১ম মহাসচিব ট্রিগভ্যালি, নরওয়ে নাগরিক। মেয়াদকাল (১৯৪৫-১৯৫৩)
  • ২য় মহাসচিব দ্যাগ হেমারশোল্ড, সুইডেন এর নাগরিক। মেয়াদকাল (১৯৫৩-১৯৬১)
  • ৩য় মহাসচিব উ থান্ট, মায়ানমার এর নাগরিক। মেয়াদকাল (১৯৬১-১৯৭১)।বাংলাদেশ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব ছিলেন।
  • ৪র্থ মহাসচিব কুর্ট ওয়ার্ল্ড হেইম, অষ্ট্রিয়া র নাগরিক। মেয়াদকাল (১৯৭২-১৯৮১)
  • ৫ম মহাসচিব প্যারেলা দে কুয়েলার, পেরু র নাগরিক। মেয়াদকাল (১৯৮২-১৯৯১)
  • ৬ষ্ঠ মহাসচিব ডঃ ব্রুটাস ঘালি, মিসর এর নাগরিক।মেয়াদকাল (১৯৯২-১৯৯৬)
  • ৭ম মহাসচিব কফি আনন, ঘানা র অধিবাসী। মেয়াদকাল (১৯৯৭-২০০৬)
  • ৮ম মহাসচিব বান কি মুন, দক্ষিণ কোরিয়ার অধিবাসী। মেয়াদকাল (২০০৭-২০১৬)
  • ৯ম মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতারেস, পর্তুগাল এর নাগরিক। মেয়াদকাল (২০১৭-বর্তমান)

জাতিসংঘের পতাকা

জাতিসংঘের পতাকার অনুপাত ২ঃ৩ বা ৩ঃ৫। ২০ অক্টোবর ১৯৪৭ সালে। (৭৬ বছর)
  • পতাকার রং ২ টি সাদা ও নীল।
  • ২ টি জলপাই শাখা দ্বারা দুই পাশে বেষ্টিত।
  • প্রতিটি অঙ্কন করেছেন ডোনাল মেকলাফলিন।
  • ২০ অক্টোবর ১৯৪৭ সাল এ আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন কয়টি

৬ টি মূল অঙ্গ সংগঠন নিয়ে গঠিত জাতিসংঘ।
  • সাধারণ পরিষদ
  • নিরাপত্তা পরিষদ
  • অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
  • অছি পরিষদ
  • আন্তর্জাতিক আদালত
  • সচিবালয়

জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ

  • ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম শান্তি রক্ষী বাহিনি তে যোগ দেয়।
  • জাতিসংঘের ৫৪ টি শান্তি মিশনে বাংলাদেশ অংশ নেয়।
  • দেশের ৪০ টি শান্তি মিশনে বাংলাদেশ অংশ নেয়।
  • ১,২৬,৪৮৯ জন শান্তি মিশনে অংশ নেয়। ১১৮ জন নিহত হয় এবং ১১৩ জন আহত হয়।
  • ২০০০ সালে ৫ জন মহিলা পুলিশ জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশ নেয়।

Frequently Asked Questions (FAQ):

Q. জাতিসংঘের বর্তমান সদস্য সংখ্যা কত ২০২৪

A. জাতিসংঘের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৯৩। জাতিসংঘের যোগদানকারী সর্বশেষ সদস্য দেশ হলো দক্ষিণ সুদান। দেশটি ১৪ জুলাই ২০১১ সালে সদস্য পদ লাভ করে।

Q. জাতিসংঘের ১ম মহাসচিব কে
A. নরওয়ের অধিবাসী জাতিসংঘের প্রধান প্রথম মহাসচিব ট্রিগভ্যালি কোরিয়া যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ থাকার কারণে তিনি পদত্যাগ করেন এবং তিনি ইসরাইলের নিকট গোপন সামরিক কূটনৈতিক নথি পাঠাতেন।

Q. জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮ তম অধিবেশনের সভাপতি কে
A. ৭৮ তম অধিবেশনের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস। বাংলাদেশ এর প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেন। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণ অনুসরণ করে।

Q. জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালের কত তারিখে
A. ২৪ শে অক্টোবর ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ নামকরণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট।

Q. জাতিসংঘের জনক কে
A. জাতিসংঘের জনক হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন।

Q. আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের কততম মহাসচিব
A. জাতিসংঘের নবম মহাসচিব আন্তোনিয় গুতেরেস পর্তুগালের নাগরিক ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি মহাসচিবের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

Q. জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কে
A. আন্তোনিয় গুতেরেস ২য় মেয়াদে ৯ম মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Q. জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কোন দেশের
A.পর্তুগাল এর নাগরিক।

Q. জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কততম
A. ৯ম

Q. জাতিসংঘ দিবস কবে
A. ২৪ শে অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস।

Q. জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সংখ্যা কত
A. মোট সংখ্যা ১৫ টি। ৫ টি স্থায়ী। যাঁদের রয়েছে ভেটো ক্ষমতা। ১০ টি অস্থায়ী দেশ যারা ২ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়।

Q.বাংলাদেশ কত সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে
A. ১৩৬ তম দেশ হিসাবে ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।

Q. কত সালে বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন
A. ২৯ তম সাধারণ অধিবেশনে,২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেয়।

Q. জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন
A. জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন শুরু হয় ১৯৪৮ সাল থেকে। সংস্থাটি নোবেল পুরস্কার লাভ করে 1988 সালে। ৭৮ টি দেশ এ অংশ গ্রহণ এর মাধ্যমে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা কাজ করছে।

Q. জাতিসংঘের সদস্য নয় কোন দেশ
A. সকল স্বীকৃত দেশ ই জাতিসংঘের সদস্য। তবে ব্যতিক্রম দেশ হল তাইওয়ান, ভ্যাটিকান সিটি, কসোভো এবং ফিলিস্তিন।

Q. মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব কে ছিলেন
A. জাতিসংঘের ৩য় মহাসচিব উ থান্ট বর্মি কূটনীতিবিদ। ২য় মহাসচিব দ্যাগ হেমারশোল্ড বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেলে ১৯৬১ সালে উ থান্ট মহাসচিব পদ লাভ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত।

Q. জাতিসংঘের প্রথম মুসলিম মহাসচিব কে
A. জাতিসংঘের এক মাত্র মুসলিম মহাসচিব কফি আনন(৭ম)। তিনি ঘানায় জন্ম গ্রহণ করেন।

Q. জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক দেশ কোনটি
A. ২ টি স্থায়ী পর্যবেক্ষক দেশ ভ্যাটিকান সিটি এবং ফিলিস্তিন।

Q. জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা কয়টি
A. ১৫ টি বিশেষায়িত সংস্থা রয়েছে জাতিসংঘের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। এগুলো হল UNDP, UNESCO, UNICEF, FAO, WHO, UNHCR, UNFPA, UNIFEM, ICAO, ILO. ইত্যাদি।

Q. জাতিসংঘের প্রশাসনিক শাখার নাম কি
A. জাতিসংঘের প্রশাসনিক শাখা ৪ টি যথা সচিবালয়, সাধারণ পরিষদ, অছি পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের মহাসচিব জাতিসংঘের সচিবালয় এর প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকে।

Q. জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
A. জাতিসংঘের মূল শাখা ৬ টি।

Q. জাতিসংঘ কী
A. একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যার প্রধান কাজ হল পৃথিবীর দেশগুলোর মধ্যে অরাজকতা, যুদ্ধ বন্ধ করা এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা, তাই জাতিসংঘ।

Q. জাতিসংঘের ইংরেজি নাম কি
A. UNITED NATIONS ORGANISATION

Q. বাংলাদেশ জাতিসংঘের কততম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করে
A. জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৯৮৬-১৯৮৭ মেয়াদে ৪১ তম অধিবেশনে হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশ ২ বার নির্বাচিত হয় অস্থায়ী সদস্য হিসাবে ১৯৭৯-১৯৮০ এবং ২০০০-২০০১ সালে।

Q. জাতিসংঘের সদর দপ্তর কোথায়
A. জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউওয়ার্ক শহরে অবস্থিত।
পূর্ণাঙ্গ ঠিকানাটি হলোঃ 405 E 45th St, New York, NY 10017, USA

Q. জাতিসংঘ শান্তি বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত
A. টোকিও জাপানের রাজধানীতে জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে এবং কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭৩ সালে।
কোস্টারিকার সানজাসে অবস্থিত জাতিসংঘ শান্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮০ সালে

Q. জাতিসংঘের কার্যকরী ভাষা কয়টি
A. জাতিসংঘের কার্যকরী অফিসিয়াল ভাষা ছয়টি ইংরেজি, আরবি, চিনা, ফারসি, রুশ এবং স্প্যানিশ। তবে জাতিসংঘের সচিবালয়ে ব্যবহৃত হয় দুইটি ভাষা ইংরেজি এবংফারসি।

Q. জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য কোন কোন দেশ
A. জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য বলতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যকে বোঝায় পাঁচটি দেশকে নিয়ে স্থায়ী সদস্য গঠিত যাদের রয়েছে ভেটো ক্ষমতা দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স।

Q. জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বর্তমান সভাপতি ২০২৩
A. ডেনিস ফ্রান্সিস

Q. জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি
A. মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত

Q. জাতিসংঘের প্রস্তাবক কে
A. ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট

Q. জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন কতটি
A. প্রায় ৭১ টি অংশগ্রহণ করেছে এবং ১২ টি চলমান আছে।

Q. জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব কোন দেশের অধিবাসী ছিলেন
A. নরওয়ে

Q. বঙ্গবন্ধুর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন কততম অধিবেশনে
A. ২৯ তম অধিবেশনে।

Q. জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদ কত বছরের জন্য
A. ২ বছর

Q. জাতিসংঘের ভেটো ক্ষমতার রাষ্ট্র কতটি
A. ৬ টি

Q. জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক দেশ কোনটি
A. ২ টি

Q. জাতিসংঘের প্রধান শাখা কয়টি
A. ৬ টি

Q. জাতিসংঘের প্রধান লক্ষ্য কি
A.জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা সফলভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রকে আর্থিকভাবে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে, যুদ্ধ-বিগ্রহ ঠেকাতে সকল ধরনের সহযোগিতা করে রাষ্ট্র গুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা জাতিসংঘের প্রধান লক্ষ্য।

লেখকে মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, উপরিউক্ত আলোচনায় জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আমি আমার স্বল্প জ্ঞান দিয়ে চেষ্টা করেছি আপনাদের মনোপযোগী জাতিসংঘ বিষয়ে আলোচনা করার। আশা করছি উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে আপনি উপকৃত হবেন।

এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল বা আপনার উপকারে আসে এমন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত দিন। নিজে ভালো থাকুন, অন্যকে ভালো রাখুন। পৃথিবী হোক সুন্দরময়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অ্যামপ্লি ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url