কিভাবে মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখবেন এবং এর সুবিধা

প্রিয় পাঠক, মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান? আবার এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি কেবলমাত্র আপনার জন্য। যেখানে আপনি জানতে পারবেন, মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি কি রয়েছে সে সম্পর্কে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
এই আর্টিকেলে আরো জানতে পারবেন- এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয়? তা বিস্তারিত।
পোস্ট সূচিপত্র 

ভূমিকা: মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং - এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি সেক্টর যেখানে আমরা অন্যের পণ্য বিক্রি করে মুনাফা থেকে টাকা উপর্জন করে থাকি। কিন্তু এই পথ এতটা ও সহজ নয়। এখানে ধৈর্য্য ও পরিশ্রম করে সফলতায় পৌঁছাতে হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে কিছুটা সময় লাগলেও এখানে সফলতা অর্জন করা অন্যান্য কাজের তুলনায় সহজ।
তবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে আমরা অনেকগুলো প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে থাকি। তার মধ্যে কমন কিছু প্রশ্ন হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো? কিভাবে করবো এর সুবিধা কি এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো মোবাইল দিয়ে কি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এই সকল প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেলে পেয়ে যাবেন। তাই মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

তথ্য প্রযুক্তির আদলে আপনার হাতের মুঠোয় অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। আপনি চাইলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে পারবেন। সেটিও আবার আপনার মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে। বর্তমান সময়ে বাজারে যেসকল মোবাইল ফোন গুলো রয়েছে তা কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মত যাতে সকল কিছুই করা যায়। চলুন জেনে নেই কিভাবে মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়।
মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে, প্রথমে আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর একটি বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় একটি সাইট বেঁচে নিতে হবে। বর্তমান সময়ে অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার নানা সাইট রয়েছে। আপনি Amazon, ClickBank অথবা ShareASale এর মত বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় সাইট গুলো থেকে যে কোন একটি বেঁচে নিতে পারেন।

এবার আপনাকে পণ্য বা সেবা বেঁচে নিতে হবে। সেটি বেঁচে নেয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো- আপনি কোন বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী এবং আপনার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ফলোয়াররা যে সকল পণ্য বা সেবা পছন্দ করেন। আপনি সেই পণ্য বা সেবা নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কাজ করতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, আপনি যেই সাইটে কাজ করবেন, সেখানে আপনার একটি প্রোফাইল বা অ্যাকাউন্ট তৈরী করুন। এবার সেই সাইট থেকে আপনার নামের লিংকটি সংগ্রহ করুন। এটি সেই লিংক, যেই লিংকের মাধ্যমে আপনি অ্যাফিলয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। লিংকটি সংরক্ষণ করুন।

এবার আপনাকে প্রচার প্রচারণা করতে হবে, সেটি যেকোন সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে হতে পারে। যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক বা অন্য কোন মাধ্যম। আপনি এই মাধ্যম গুলোতে আপনার পণ্য অনুযায়ী ইমেজ অথবা পণ্য রিভিউ, আনক্সিং বা টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরী করতে পারেন এবং এই মাধ্যম গুলোতে আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং লিংক সহ শেয়ার করতে পারেন।
লিংটি শেয়ার করা সময় আপনার গ্রাহকদের অবশ্যই সেই লিংক সম্পর্কে অবগত করুন। এটি যে একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক তা ‍উল্লেখ করুন। এতে করে গ্রহকরা আপনার প্রতি একটি স্বচ্ছ ধারণা পাবে। এবার আপনি আপনার মোবাইলে গুগল অ্যানালিটিক্স বা এই জাতীয় অন্য কোন অ্যাপস বা সাইট থেকে আপনার লিংকগুলো আবস্থান নির্নয় করুন।

এখান থেকে আপনি দেখতে পারবেন আপনার কোন লিংকগুলো কম ক্লিক পাচ্ছে এবং কোন ক্লিকগুলোতে বেশি ক্লিক আসছে। সেই লিংকগুলোতে কম ক্লিক আসছে, সেগুলো ভালো ভাবে মনিটরিং করুন। যাতে সেগুলো ভাবে ভাবে কাজ করে। আশা করি মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো টাকা ইনকাম করার জনপ্রিয় ও সহজ একটি উপায়। যেখানে আপনি যেকোন জায়গা থেকে এই কাজ করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রধান কাজ হলো পণ্য বিক্রি করে কমিশন নেয়া। এটি চাইলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ও করা যায়। এছাড়া আরো অনেক সুবিধা রয়েছে। চলুন জেনে নেই-
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং যে কোন সময়, যে কোন জায়গা থেকে করা যায়। তাই সময় ও শ্রম দুটোই সাশ্রয় হয়।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক কম খরচে শুরু করা যায়। তাই এখানে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
  • এটি করে অনেক বেশি আয় করা যায়। কারণ আপনি এখানে যত বেশি বিক্রি করতে পারবেন। আপনার ইনকাম তত বৃদ্ধি পাবে।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আপনি চাইলে মোবাইলের মাধ্যমে ও করতে পারবেন। এটির জন্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বাধ্যতা মূলক নয়।
  • এখানে আপনার নিজেস্ব কোন পণ্য থাকার প্রয়োজন নেই বরং অন্যের পণ্য বিক্রি করে আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আপনি আপনার পছন্দ মত বা আপনার পণ্যতে আগ্রহ বেশি সেই পণ্য নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
  • এটি শিখতে গিয়ে আপনি বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সহ অন্যান্য দক্ষতা।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যান্য কাজের ফাঁকে ও করতে পারবেন। যা আপনার অন্যান্য কাজের কোন ক্ষতি করবে না। এতে করে আপনার সময় অনেকটা সাশ্রয় হবে।
  • সর্বশেষ আপনি ভালো প্রচার প্রচারণা করে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন। যা অন্যান্য সেক্টর গুলোতে এত দ্রুত সম্ভব না।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবেন তার অনেক গুলো কারণ রয়েছে। আপনি যদি অনলাইন কোন মাধ্যম থেকে অতিদ্রুত ইনকাম করতে চান তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং আপনার জন্য উপযুক্ত একটি প্লাটফর্ম। এছাড়া অরো অনেক গুলো কারণ রয়েছে যেই কারণ গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং করা উচিত।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করার করণ হলো- আপনি যেখানে ইচ্ছা সেখানে বসে করতে পারবেন। এই কাজের জন্য আলাদা কোন অফিস বা জায়গার প্রয়োজন হয় না। শুধু মাত্র ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে আপনি আপনার মোবাইল বা ল্যাপটপে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করতে পারবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে অন্যান্য সেক্টরের থেকে কম সময় লাগে। এটির জন্য কোন কোর্স না করে ও অনলাইনে ফ্রি ভিডিও, ব্লগ বা ফ্রি কোর্স থেকে সহজেই শিখতে পারবেন। তবে এর জন্য প্রয়োজন হবে, আপনার জানার প্রতি আগ্রহ এবং কঠোর পরিশ্রমের সাথে কাজটি করে যাওয়া। তাহলে অতি দ্রুত এখানে সফল হবেন।

আপনি যে কাজই করুন না কেনো, সেই কাজের পাশাপাশি এই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করতে পারবেন। যা আপনার একটি বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করবে। আপনি চাইলে এফিলিয়েট মার্কেটিং পার্ট টাই বা ফুল টাইম করতে পারবেন। যা আপনার অতিরিক্ত অর্থের অভার পূর্ন করবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে আপনার কোন বিনিয়োগ করতে হয় না। আপনাকে কোন পণ্য স্টোর করতে হয় না বা ডেলিভেরির কোন ঝামেলাও নেই। এখানে কেবলমাত্র আপনি কোন একটি পণ্য প্রচার প্রচারণা করবেন এবং সেটি বিক্রি হলে সেখান থেকে কমিশন লাভ করবেন। যে কারনে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি একটি ভালো প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ তৈরী করতে পারবেন। শুরুতে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক সব জায়গায় প্রচার প্রচারণা করলে, একটি সময় গিয়ে আপনাকে আর কোন প্র্রচার প্রচারণা করতে হয় না। যার কারণে এই লিংক থেকে আপনি দীর্ঘ সময় ধরে একটি প্যাসিভ ইনকামের পথ তৈরী করতে পারবেন। উপরিউক্ত কারণ গুলোর জন্যই আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং করা উচিত।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয়?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয় তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন ধরুন আপনি কোন পণ্য বা সেবা নিয়ে কাজ করবেন, সেই পণ্য বা সেবার চাহিদা কেমন, বিক্রি কেমন হয় এবং আপনার মার্কেটিং স্কিল কেমন? এই সবকিছুর উপর বিবেচনা করে আপনার কমিশন আসবে। চলুন জেনে নেই কোন পণ্যতে কেমন কমিশন পাওয়া যায়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয়?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে বিভিন্ন পণ্যরে কমিশন ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি ফিজিক্যাল পণ্য নিয়ে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে সেই পণ্যগুলো জন্য ১% থেকে ১০% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে। যদি পণ্যগুলো ফ্যাশন বা বিলাসবহুল হয়ে থাকে তাহলে সেগুলোতে ১০% কমিশন পাওয়ার যায়।
ডিজিটাল পণ্য সেল করার মাধ্যমে ২০% থেকে ৫০% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া যায়। অনলাইন কোর্স, সফটওয়্যার বা কোন সাবস্ক্রিপশন সার্ভিসে সবচেয়ে বেশি কমিশন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ClickBank প্লাটফর্মে সকল ডিজিটাল পণ্যে উপর ৩০% থেকে ৫০% অবদি কমিশন দিয়ে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন পণ্যতে আলাদা আলাদা কমিশন পাওয়া যায়।

সার্ভিস ভিত্তিক পণ্যতে ও অনেক বেশি কমিশন পাওয়া যায়। এই সার্ভিস গুলোর মধ্যে রয়েছে এসিও টুলস, ওয়েব হোস্টি বা অন্যান্য সার্ভিস। এই সার্ভিস গুলোতে ৩০% থেকে ৬০% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া যায়। আপনি যদি Bluehost সাইটের দিকে লক্ষ করেন তাহলে দেখবেন তারা এই ধরনের কাজের জন্য ৫০% এর ও বেশি কমিশন দিয়ে থাকে।

লেখকের মন্তব্য: মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং - এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

প্রিয় পাঠক, আশা করি মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা সমূহ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়া অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয় এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন কররেন সে বিষয়ে অবগত হয়েছেন এবং পূনাঙ্গ ধারণা পেয়েছেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পরিশ্রম ও ধৈর্য্যের প্রয়োজন হয়। এসকল মনোভাব নিয়েই আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে হবে। প্রতিটি বিষয় ভালো ভাবে শিখতে হবে এবং তা প্রতিনিয়ত চর্চা করতে হবে। তাহলে আপনি একজন সকল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন। পরিশ্রম করুন সফলতা আসবেই।

এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল বা আপনার উপকারে আসে এমন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত দিন। নিজে ভাল থাকুন, অন্যকে ভালো রাখুন। পৃথিবী হোক সুন্দরময়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অ্যামপ্লি ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url