ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি, সুবিধা, যোগ্যতা ও সুদের হার কত

প্রিয় পাঠক, ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি এবং ব্র্যাক এনজিও ঋণ সুদের হার কত তা জানতে চেয়ে আর্টিকেলটিতে ক্লিক করাতে আপনাকে ধন্যবাদ। আজকের এই আর্টিকেলে আমি জানাবো- ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে এবং ব্র্যাক এনজিও ঋণ সুদের হার মাসে কত টাকা সে বিষেয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি
এছাড়া, ব্যাক এনজিও লোন ফরম কিভাবে ফিলাপ করতে হয় এবং কিভাবে পূরণ করলে অতি দ্রুত লোন পাওয়া যায় সে বিষয়ে ও আলোচনা করবো। অতএব সময় দিয়ে সাথেই থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্র 

ভূমিকা: ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি - ব্র্যাক এনজিও ঋণ সুদের হার

ব্রাক এজিও বাংলাদেশের একটি সুনাম ধণ্য বেসরকারি প্রতিষ্টান। দারিদ্রতা নিরাসনে তারা নান কর্মসূচি ও সেবা প্রদান করে থাকে। তার মধ্যে তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রধান কার্যক্রম হলো ক্ষুদ্রঋন প্রদান। যেসকল মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন, তাদের আর্থিক স্বাচ্ছলতা প্রদানে তাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে থাকে।
ব্রাক এনজিও লোন পদ্ধতির কারনে স্বল্প আয়ের মানুষরা তাদের আর্থিক সমস্যা সমাধান করতে পেরেছেন। তারা এখন নিজে উদ্যোক্ত হয়ে কিছু করা মাধ্যমে তাদের যে ঋন রয়েছে সেগুলো পরিশোধ করছে। আর ব্রাক এনজিও লোন পদ্ধতি অন্যান্য এনজিওর তুলনায় অনেক সহজ এবং অতি দ্রুত লোন পাওয়া যায়।

ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি

ব্রাক এনজিও লোন পদ্ধতি মূলত পাঁটি পর্যায়ে হয়ে থাকে। যেই লোনগুলো মূলত দেশের নানা স্তরের সম্প্রদয় পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে রয়েছে- গ্রামে বসবাসকারী মহিলারা, যারা ভূমিহীন বা নিজের কোন জায়গা জমি নেই, অভিবাসী শ্রমিক, যুব সম্প্রদায়, কৃষক সহ নানা দরিদ্র জনগোষ্টী এবং যারা কিছু করতে চান মানে উদ্যেক্তাদের নিয়ে ব্রাক এনজিও তাদের এই লোন কার্যক্রম পরিচলনা করেন।

পাঁচটি লোন পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে গ্রামসংগঠন ভিত্তিক লোন প্রদান, ক্ষুদ্রঋণ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋন, অভিবাসী কল্যাণ ঋণ, কৃষি এবং উদ্ভবন এই গুলোর উপরে মূলত ব্রাক এনজিও লোন প্রদান করে থাকে। দ্রারিদ্রতার ভিন্নতার খুঁজে বের করে, তাদের চাহিদা মত ব্রাক এনজিও লোন প্রদান করে থাকে।
ব্রাক এনজিও এর এই কর্মসূচিগুলো বাংলাদেশ সহ মোট ৭ টি দেশে প্রদান করে থাকে। যার মধ্যে রয়েছে - মিয়ানমার, উগান্ডা, লাইবেরিয়া, তানজানিয়া, সিয়েরা লিওন এবং সর্বশেষ পাকিস্তান। দারিদ্রতা উন্মচনের এবং চাহিদামত সেবা প্রদানে শীর্ষে রয়েছে ব্রাক এনজিও। প্রতিনিয়ত তারা তাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে।

ব্রাক এনজিওতে ক্ষুদ্রঋন কর্মসূচিতে এই প্রতিষ্টানের সাথে সংশ্লিষ্ট সদস্যরা বিভিন্ন কারণে আর্থিক সেবা পেতে পারেন। আপনি যদি ব্র্রাক এনজিওর একজন সদস্য হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি আপনার যে সম্পদ রয়েছে সেটিতে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে এবং আপনার যেকোন ক্ষতি পূরণে ব্রাক এনজিও থেকে লোন নিতে পারবেন।

ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতিতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়

ব্রাক এনজিও থেকে লোন নিতে আপনাকে কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে হতে পারে। যেগুলো ছাড়া টাকা পাওয়া অসম্ভব। তাই আগে থেকেই জেনে নিন ব্রাক এনজিও থেকে লোন পেতে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
  • প্রথমে আপনাকে অবশ্যই একটি আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।
  • তারপর আবেদন কারীর ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • এবার আপনাকে ২ জন জামিনদার যোগাড় করতে হবে। ২ জন জামিনদারের মধ্যে একজন অবশ্যই আপনার পরিবারের কেউ এবং ২য় জন আপনার পরিবারের বাহিরের কেউ হতে হবে।
  • জামিন দারের যেসকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়, তাহলো ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • এছাড়া আবেদন কারীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
  • আপনি যদি প্রবাসী হয়ে থাকেন বা প্রবাসে যেতে তাহলে ভিসার ফটোকপি এবং ওর্য়াক পারমিটের ফটোকপির প্রয়োজন হবে।
  • আর আপনি যদি পুরাতন প্রবাসী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে রেমিটেন্সের কাজপত্র। এছাড়া আকামার ফটোকপি এবং ছুটিতে আসার কাজপত্র।
  • আপনি যদি ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টাকা লোন নিয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে কোন দলিল জমা দিতে হবে না। কিন্তু আপনি যদি ২ লক্ষ টাকার উপরে লোন নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে নিজেস্ব সম্পত্তির মূল দলিল জমা দিতে হবে। এছাড়া আরো লাগবে খাজনা এবং খতিয়ানের কাগজ।
  • সর্বশেষ ব্রাক এনজিও থেকে আপনাকে টাকা নিতে অবশ্যই কোন ব্যংকের অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। ব্র্যাক এনজিও আপনাকে সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা লোন দিবে। এছাড়া লোন নেয়ার সময় আপনার ঐ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকের পাতা জমা দিতে হবে।

ব্র্যাক এনজিও প্রবাসী লোন ২০২৪

ব্র্যাক এনজিও সাধারণত ২ টি উপায়ে প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে। একটি হলো যারা বিদেশে যাবেন তাদের জন্য প্রবাসী লোন আর ২য় টি হলো যারা বিদেশ থেকে ফিরত এসেছেন তাদের জন্য প্রবাসী লোন। এখন যারা বিদেশে যাবেন তারা কেবলমাত্র ভিসা সম্পূর্ন হলেই ব্রাক এনজিও থেকে প্রবাসী লোন পাবেন অন্যথায় পাবেন না।

আবার যারা বিদেশ থেকে ফিরত এসেছেন তারা দেশে এসে কিছু করতে চান। তারা তাদের পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজ পাতি দেখিয়ে ব্রাক এনজিও থেকে প্রবাসী লোন নিতে পারবেন। ব্রাক এনজিও থেকে লোন নিতে অবশ্যই যে শাখা হতে লোন নিবেন সেই শাখার সদস্য হতে হবে এবং আপনার সঞ্চয় ও জামানত বাধ্যতা মূলক থাকতে হবে।
লোনের জন্য আবেদন করতে অবশ্যই আপনার বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। প্রবাসী লোন সকল দেশে যাওয়ার জন্য দেওয়া হয় না। যেই দেশ গুলোতে যেতে ব্রাক এনজিও থেকে প্রবাসী লোন দেওয়া হয়- সৌদি আরব, ওমান, ইরাক, ডুবাই, কাতার, তোহার এই দেশগুলো জন্য লোন খুব সহজেই পাওয়া যায়।

প্রবাসীরা সাধারণত এক থেকে ৫ লক্ষ টাকার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবার আগে যারা প্রবাসী ছিলেন কিন্তু এখন দেশে অবস্থান করেন তারা লোন পাবেন সর্বোনিম্ন ১ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এই লোন গুলো সাধারণত ১২ মাস থেকে ২৪ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদি প্রতি মাসে একটি করে কিস্তি হয়, সেক্ষেত্রে কিস্তির মেয়াদ ১২ থেকে ২৪ টি হতে পারে।

ব্র্যাক এনজিও ঋণ সুদের হার

ব্রাক এনজিও থেকে ঋণ নিতে সুদের হার সম্পর্কে জানা খুবেই জরুরি। কেননা, আপনি কত টাকা নিবেন, তার সুদ কত টাকা আসবে, আপনি কত টাকা জমা দিবেন এই বিষয় গুলো জানা প্রয়োজন। অনেকেই রয়েছেন যারা ঋণ নেন কিন্তু জানেন না আপনার সুদের হার কত টাকা। মাস শেষে কিস্তিতে গিয়ে তৈরী হয় নতুন কোন সমস্যার। তাই ব্রাক এনজিও থেকে ঋন নিতে সুদের হার সম্পর্কে জানুন-

ব্র্যাক এনজিও মূলত গ্রামের মানুষদের তিনটি উপায়ে লোন প্রদান করে থাকে। যেগুলো হলো- দাবি, উন্নতি এবং প্রগতি। দাবি লোন পদ্ধতি সেই সকল লোকদের দেওয়া হয় যারা প্রান্তিক জনগোষ্টি তাদের জন্য। উন্নতি লোন পদ্ধতি সেই সকল লোকদের দেওয়া হয় যারা প্রান্তিক জনগোষ্টির থেকে খানিকটা সচ্ছল।
আর প্রগতি লোন পদ্ধতি সেই সকল লোকদের দেওয়া হয়, যারা মূলত ব্যবসা করে থাকেন তাদের জন্য। আপনি যে পর্যায়েই লোন নিয়ে থাকেন না কেনো? আপনি যদি ১ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে লোন গ্রহন করে থাকেন, তাহলে সুদের হার হবে ২৬%। যা পূর্বে ছিলো ২৪% তা বাড়িয়ে ২৭% করা হয়েছিলো। কিন্তু ব্র্যাক তাদের নিজ উদ্দেগ্যে ১% কমিয়ে ২৬% করেছে।

কিন্তু আপনি যদি ৫ লাক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার লোনের হার হবে ২২%। লোনের টাকা যত দেরিতে পরিশোধ করবেন আপনার টাকার পরিমান তত বৃদ্ধি পাবে। তাই যতদূত সম্ভব লোন পরিশোধ করার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার সুদের হার কম পরিশোধ করতে হবে।

ব্র্যাক এনজিও লোন ফরম1 - brac bank loan form

ব্র্যাক এনজিও তে লোন নিতে গেলে আপনাকে অবশ্যই ব্র্যাক এনজিও থেকে অবশ্যই একটি ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এই ফরম সংগ্রহ ছাড়া আপনাকে কোন মতেই ব্র্যাক এনজিও থেকে লোন দেওয়া হবে না। তাই অবশ্যই ফরম টি গুগল থেকে ডাউনলোড করে নিতে হবে অথবা যেকোন কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আপনার অন্যান্য কাগজ পত্রের সাথে এই আবেদন ফরম টি জমা দিতে হবে বিধায় আপনাকে এই ফরমটি সংগ্রহ করতে হবে। উপরিউক্ত কাগজ পত্র জমা দেওয়ার ১৫ থেকে ২০ কর্মদিবসের মাঝে আপনার সকল তথ্য যাচাই বাচাই করে, আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হবে।

লেখকের মন্তব্য: ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি - ব্র্যাক এনজিও ঋণ সুদের হার

প্রিয় পাঠক, আশা করি ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে ব্র্যাক এনজিও ঋণ সুদের হার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়া আরো জেনেছেন আবেদন করতে কি কি যোগ্যতা লাগে কি কি কাগজ পত্র লাগে। লোন নেয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকুন। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে লোন উত্তলন করবেন না। লোন আপনাকে শান্তিতে ঘুমাতে দেবে না। লোন উত্তলন করলে নিয়মিত লোন পরিশোধ করুন।

এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল বা আপনার উপকারে আসে এমন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত দিন। নিজে ভাল থাকুন, অন্যকে ভালো রাখুন। পৃথিবী হোক সুন্দরময়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অ্যামপ্লি ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url