মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক, মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান? অথবা ভাবছেন কিভাবে মাসে ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি আয় করা যায়? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য, যেখানে আপনি জানতে পারেন মাসে কিভাবে ২০ হাজার টাকা করা যায় এবং আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।
এছাড়া কি কি উপায় অবলম্বন করলে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। সে বিষয়ে ও আলোচনা করবো।
মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
তথ্য প্রযুক্তির এই অগ্রগতি কারণে আমাদের অনলাইন এবং অফলাইনে আয় করার ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই রয়েছে যারা ঘরে বসে তার ইন্টারনেট সংযোগকে কাজে লাগিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। এর জন্য কোন টাকা ইনভেস্ট করতে হয় না। তার জন্য প্রয়োজন হয় যে কোন বিষয়ে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা।
অনলাইন হোক বা অফলাইন দুই মাধ্যমেই এমন কিছু উপায় রয়েছে, যেই উপায়গুলো অনুসরন করলে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। সেই রকম কিছু অনলাইন এবং অফলাইনে আয় করা উপায় সম্পর্কে বলবো, সেগুলো আপনার বাস্তব জীবনে কাজে আসবে। যা আপনার ইনকামের পথকে সহজ করে দিবে। চলুন জেনে নেই-
অনলাইন ব্যবসা করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
আপনার যদি ব্যবসা সম্পর্কে কোন আইডিয়া থাকে, তাহলে সেই আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে আপনি অনলাইন ব্যবসা চালু করতে পারেন। এই অনলাইন ব্যবসা করে মাসে ২০ হাজার বা তারচেয়ে বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনি চাইলে নিজের পণ্য অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন আবার অন্য কারোর পণ্য ও বিক্রি করতে পারেন।
আমরা দারাজের কথা মোটামুটি সবাই জানি এবং ব্যবহার করে থাকি। আপনি জানলে অবাক হবেন এই দারাজে বেশির ভাগ সেলারের নিজস্ব কোন পন্য নেই। তার অন্যের পণ্য বিক্রি করে টাকা আয় করে থাকে। তার জন্য তারা কিছু কৌশল অবলম্বন করে। যে কৌশল গুলো আপনি ও কাজে লাগাতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
প্রথমে তারা কোন একটি দোকান বা সুপার শপে গিয়ে, সেই কতৃপক্ষের সাথে নিদিষ্ট কিছু পণ্য নিয়ে আলোচনা করে যে- আপনার দোকানের এই পণ্য গুলো আপনাকে বিক্রি করে দিতে চাই, বিনিময়ে আপনাকে এত টাকা মুনাফা দেবো। দোকান বা সুপারশপ কৃতপক্ষ রাজি হলে, তারা এই পণ্যসমূহের কিছূ ছবি উঠায়।
তারপর তারা দারাজে একটি সেলার অ্যাকাউন্ট খুলে, সেই পণ্যের ছবি সহ দাম এবং এই পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে তা আপলোড করে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেকেই মাসে ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি ইনকাম করছে। আপনি ও চাইলে এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফেসবুক মার্কেটিং করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
ফেসবুক এমন একটি সোশ্যাল মিডিয়া যেখানে কেবলমাত্র ভিডিও, রিলস দেখে সময় নষ্ট না করে এখান থেকে প্রতি মাসে অনেক অংকের টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু তার জন্য নিজেকে একটু পরিশ্রমী এবং দক্ষতাকে কাজে লাগানো শিখতে হবে। তাহলে ফেসবুক মার্কেটিং থেকে শুরু ২০ হাজার না এর বেশি ও আয় করা সম্ভব।
ফেসবুকে আপনি যদি নিজের পন্য বা সেবা প্রদান করতে চান তাহলে আপনাকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। প্রথম ধাপে আপনাকে একটি প্রোফেশনার ফেজবুক পেজ খুলতে হবে এবং তাতে ফলোয়ার সংখ্যা বাড়াতে হবে। পেইড ফলোয়ার নিয়ে ও ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। কিন্তু তার জন্য কিছু পরিমান টাকা লাগতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কোটি টাকা আয় করার ৫টি উপায়
এরপর সেখানে আপনাকে আপনার তৈরী পণ্যের ছবি ও দাম উল্লেখ করে তা আপলোড করতে হবে। ফলোয়ার বাড়ানোর সময় অবশ্যই সেই সকল ফলোয়ার এড করবেন, যাদের আপনার পণ্যসমূহের প্রতি আগ্রহ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপনার পণ্য গুলো সম্পর্কে তাদের বুঝাতে এবং বিক্রি করতে সহজ হবে।
এরপর আপনাকে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলতে হবে। গ্রুপের নাম অবশ্যই আপনার পেজের নামে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। গ্রুপে আপনি ইচ্ছমত একটিভ মেম্বার যোগ করতে পারবেন। এবার এই গ্রুপে আপনার পেজে আপলোড করা ছবি গুলো এখানে শেয়ার করে দিন। তাহলে হবে কি- আপনার পেজে যারা রয়েছে, তার ও আপনার পোস্ট গুলো দেথতে পারবে এবং গ্রুপের মেম্বাররা ও দেখতে পারবে।
এই দুটি কাজ করে যদি সফল না হতে পারেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই পেইড মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে হবে। পেইড মার্কেটিং এর সুবিধা হলো আপনি আপনার ইচ্ছামত গ্রহকদের বাছাই করে, তাদের কাছে আপনি আপনার বিজ্ঞাপনটি পৌঁছাতে পারবেন। আশা করি ফেসবুক মার্কেটিং বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
কনটেন্ট রাইটিং করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
কনটেন্ট রাইটিং করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব, তার জন্য আপনাকে কৌশলি এবং লেখালেখির বিষয়ে কিছুটা দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত ভালো মানের কন্টেন্ট লেখতে পারেন এবং গুগলের যেসকল নিয়ম কানুন রয়েছে, সেগুলো মেনে কন্টেন্ট লেখতে পারেন তাহলে এই সেক্টরে আপনি সফল হবেন।
কন্টেন্ট রাইটিং করতে শুরুতে যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হয়, তাহলো ভাষাগত দক্ষতা। বাংলা হোক বা ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা ছাড়া কন্টেন্ট রাইটিং এ ভালো করা সম্ভব না। এছাড়া আপনি কোন একটি বিষয়ে লেখালেখি করছেন, সে বিষয়ে আপনি জানেন না। তাহলে সেই কন্টেন্ট পাঠকের কাছে খুব ভালো না ও লাগতে পারে। সেই জন্য নিদিষ্ট কোন বিষয়ে পারদর্শী হলে অনেক তাড়াতাড়ি মানসম্পন্ন কন্টেন্ট লেখা যায়।
কন্টেন্ট রাইটিং বিষয়ে যথাযথ জ্ঞান অর্জন সম্পূর্ন হলে, আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন। যার মধ্যে ফাইবার, আপওর্য়াক, পিপল পার আওয়ার গুলোতে কন্টেন্ট রাইটিং কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। কন্টেন্ট রাইটিংয়ে চাহিদা অনেক বেশি হওয়াতে আপনি সহজেই এই মার্কেপ্লেসগুলোতে কাজ পেতে পারেন।
এছাড়া এসিও কন্টেন্ট রাইটিং করে নিজে ওয়েবসাইট দাঁড় করিয়ে, গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়েব সাইটের জন্য কন্টেন্ট রাইটিংয়ে কাজ করে ও মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কন্টেন্ট রাইটিংয়ে হাই সিপিসি কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
কৃষিকাজ করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
এই যুগে কৃষি কাজ করে ও মাসে ২০ টাকা আয় করা যায়। তবে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে কৃষিকাজ সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন এবং আপনার আবাদি জমি কতটুকু তার উপর। আপনার যদি চাষ বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকে এবং বেশ কিছু পরিমান জমি থাকে তাহলে দেরি না করে আজ থেকেই কাজে লেগে পড়ুন।
বাংলাদেশের মানষ ভাত, রুটি এগুলো খেতে বেশি পছন্দ করে থাকে এবং সেগুলো প্রতিদিন খেয়ে থাকে। তাই আপনার উচিত হবে ধান অথবা গম চাষ করা। এই ফসলগুলো উচ্চফলনশীল এবং উচ্চমূল্যের হয়ে থাকে। পাইকারী এবং খুচরা দুই বাজারেই ধান ও গমের চাহিদা অনেক বেশি। তাই আপনি ধান বা গম দিয়ে শুরু করতে পারেন।
এছাড়া আপনি শাক-সবজি বা ফল-মূলের চাষও করতে পারেন। বর্তমান সময়ে আপনি বাজারে গেলে দেখতে পারবেন, বাজারে ফল-মূল ও শাক-সবজির চাহিদা কেমন এবং দাম কতটা উচ্চমূল্যের। তাই আপনি শাক-সবজি বা ফল-মূলের চাষ অতি উৎসাহের সাথে করতে পারেন। যেই খাত থেকে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা সহজ।
আবার এই জমিগুলোতে আপনি নার্সারি ও দিতে পারেন। গাছ লাগন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুশকর। নার্সারির গাছ পুরে বছর ধরেই মানুষ লাগিয়ে থাকেন। তাই এই গাছের চাহিদা সবসময় থাকে। হতে পারে তা কোন ফলের গাছ, ফুলের গাছ বা কোন ঔষধি গাছ। এই নার্সারি ব্যবসা থেকে একদিনেই ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
গবাদি পশু পালন করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
গবাদি পশু পালন করা সবচেয়ে সহজ। এখানে কম খরচে অনেক বেশি লাভ করা যায়। গ্রামের দিকে বেশির ভাগ মানুষ তাদের বড় আয়ের উৎস হিসেবে গবাদি পশু পালন করে থাকে। গুড়ো ও ভূসি এই সকল প্রাণীর প্রধান খাবার যেগুলো তাদের জমিতে উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া বাসাতে থাক অতিরিক্ত খাবার তাদের খাওয়ানো যায়।
গবাদি পশুর দুধ বিক্রি করে আয় করা যায়। একটি উন্নত জাতে গুরু দিনে ১৫ থেকে ১৬ লিটার পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে। যা বাজারে অনেক ভালো দামেই বিক্রি করা যায়। দুধের পরিমান আরো বৃদ্ধি করা যায় পরিমান মত ভালো খাবার এবং তাদের থাকার পরিবেশ উন্নতি করনের মাধ্যমে। দুধ বিক্রি করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
গুরু বিক্রি করার মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। তবে এই টাকা আপনি হয়তো প্রতি মাসে পাবেন না। কিন্তু যখন বিক্রি করবেন, তা মাসে ২০ হাজার টাকার ও বেশি হতে পারে। বিভিন্ন অনুষ্টান উপলক্ষে গুরু বিক্রি করলে অনেক ভালো দামে বিক্রি করা যায়। এছাড়া কুরবানিতে গুরু দাম অনেক ভালো যায় তখন এর চাহিদা ও অনেক বেশি থাকে।
ছাগল পালন করে ও অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব। ছাগল পালনে জায়গা অনেক কম লাগে এবং তুলনামূলক ভাবে খরচ ও অনেক কম হয়। এছাড়া উন্নত ছাগলের অনেক চাহিদা রয়েছে। যার মধ্যে ব্লাক বেঙ্গল বা দুধ দেয় এমন ছাগল অনেক বেশি জনপ্রিয়। এছাড়া ছাগল একাধিক বাচ্চা দিয়ে থাকে, যেগুলো বিক্রি করে ২০ হাজার টাকার বেশি ইনকাম করা যায়।
লেখকের মন্তব্য: মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
প্রিয় পাঠক, আশা করি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এছাড়া কি কি উপায় অনসরণ করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে অবগত হয়েছেন। উপরে উল্লেখি উপায় গুলো কেবলমাত্র আপনাদের ইনকাম করার ধারণা দেওয়ার জন্য লেখা। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্টান উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে যদি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে অ্যামপ্লি ইনফোন কোন দায় ভাড় বহন করবে না।
এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল বা আপনার উপকারে আসে এমন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত দিন। নিজে ভাল থাকুন, অন্যকে ভালো রাখুন। পৃথিবী হোক সুন্দরময়।
অ্যামপ্লি ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url